জেনে নিনলাইফ স্টাইল

রাগ নিয়ে যে ১০টি কাজ কখনোই করবেন না


অনেক কারণেই আপনার মেজাজটা খিটমিটে হয়ে যেতে পারে আর এই খারাপ মেজাজ নিয়ে প্রতিদিনই কাজ করতে হয় তবে মেজাজ খারাপের নানারকম ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে তাই বিশেষজ্ঞরা এখানে ১০টি কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন যা মেজাজ গরম অবস্থায় কখনো করা উচিত নয়

. ঘুমানো
রাগ নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া উচিত নয়। জার্নাল অব নিউরোসায়েন্স প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন বলে, ঘুমানোর সময় মানুষের নানা স্মৃতি মনে পড়ে এবং এতে আবেগ মিশে থাকে। নিউ ইয়র্কভিত্তিক বোর্ড সার্টিফাইড স্লিম মেডিসিনের চিকিৎসক অ্যালেন টওফি বলেন, জাগ্রত অবস্থায় বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতি পুনরায় ঘণীভূত হয় ঘুমানোর সময়। ফলে রাগ নিয়ে ঘুমাতে গেলে মানুষের নেতিবাচক আবেগের ঘনঘটা দেখা দেয়।
. গাড়ি চালানো
এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাগী চালকরা বেশি ঝুঁকি নেয় এবং দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সান্টা মনিকার ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ডেভিড নারাং জানান, যখন রাগ হয়, তখন মানুষের মধ্যে আক্রমণের প্রবণতা থাকে। আর অবস্থায় গাড়িতে ওঠা বিপজ্জনক। রাগ মানুষের মধ্যেটানেল ভিশনতৈরি করে অর্থাৎ তখন মানুষ সোজা তাকিয়ে থাকে। সময় পাশের পথচারী বা গাছ চোখে নাও পড়তে পারে।
. রাগ ঝাড়া
রাগ অন্য কিছুর ওপর ঝেড়ে দেওয়ার বুদ্ধিটা কিন্তু ভালো নয়। এতে রাগ আরো বেড়ে যায়। সাইবারসাইকোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তথ্য বলা হয়। আরেক গবেষণায় দেখা যায়, রাগ করে বালিশের ওপর ঘুষি দিয়ে রাগ কমে না। বরং তা আরো বেড়ে যায় এবং আচরণ মানুষের মধ্যে আক্রমণ প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।
. খাওয়া
কনকোয়ার ইওর স্ট্রেস উইথ মাইন্ড/বডি টেকনিকসবইয়ের লেখক কেথি গ্রুভার বলেন, রাগের সময় খাওয়া দুইভাবে ক্ষতি করতে পারে। এতে ক্ষতিকর খাবার বেছে নেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দ্বিতীয়ত, এর ফলে বিপাক প্রক্রিয়ায় ঝামেলা দেখা দিতে পারে। আর এতে ডায়রিয়াও হয়ে যেতে পারে।
. তর্ক করে যাওয়া
সিরাকাসের মনোবিজ্ঞানী এবং প্রশিক্ষক ক্রিস্টিন আ্যালেন জানান, মেজাজ খারাপ করে তর্ক চালিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সময় প্রিয়জনকেও আপনি এমন কথা বলে ফেলতে পারেন যার অনুশোচনায় পরে ভুগতে হবে। সময় আপনি কিছু সময় নিতে পারেন এবং মেজাজ কিছুটা ঠাণ্ডা করে আবার আলোচনায় ফিরে আসতে পারেন।
. ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া
রাগ নিয়ে ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়া উচিত নয়। কারণ সময় কারো ওপর রাগের কথা গোপন রাখার প্রয়োজন হলে তা প্রকাশ পেয়ে যাবে যা আপনার ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।
. মেইল লেখা
গুরুত্বপূর্ণ মেইল লিখতে গেলে রাগ প্রকাশ পাবে সেখানে। নরম সুরে যে মেইলটি লিখতে হবে তা কঠোর হয়ে যাবে।
. অ্যালকোহল পান
যদি ভেবে থাকেন একটু অ্যালকোহল পান করলে মেজাজ ঠাণ্ডা হবে তাহলে ভুল করছেন। বরং এটি ইমপালস কন্ট্রোল নষ্ট করে দেয়। অ্যালকোহল মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লোবে ক্রিয়াশীল থেকে ইমপালস কন্ট্রোল নষ্ট করে দেয়। ইমপালস কন্ট্রোলের মাধ্যমে আমরা অন্যের এবং নিজেদের ক্ষতি করা থেকে দূরে থাকি।
. রক্তচাপ পরীক্ষা
দুই ঘণ্টার রাগ হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় বলে জানায় ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নালের এক প্রতিবেদন। কারণ রাগ বৃদ্ধির সঙ্গে রক্তচাপ বাড়তে থাকে। তাই অতিমাত্রায় রাগ হলে রক্তচাপ পরীক্ষা করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেনবিট দ্য হার্ট অ্যাটাক জিন : দ্য রেভুলেশনারি প্ল্যান টু প্রিভেন্ট হার্ট ডিজিজ, স্ট্রোক এন্ড ডায়াবেটিসবইয়ের লেখক ব্র্যাডলি বেল।
১০. অবচেতন মনে দুশ্চিন্তা করা
রাগের ফলে এক ধরনের মানসিকতা তৈরি হয়। তখন অবচেতন মন চিন্তা করতে থাকে রাগের কারণ নিয়ে। যেমনঅন্য মানুষ কীভাবে আপনার ক্ষতি করতে পারে বা আপনি তার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারেন ইত্যাদি। অন্যের রাগের কারণ আপনি হয়ে থাকলে প্রতিক্রিয়ায় নিজের রাগ সামলে রাখুন। সময় অন্যের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ রাখুন এবং একাকী একটু সময় কাটান