বর্তমানে ভুঁড়ি একটি বড় বিড়ম্বনার কারণ। এই সমসসা যার আছে সেই বোঝে। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কত কি না করেন। কিন্তু তার কোনওটিই কার্যকরী হয় না। তার একটি কারণ আছে। ভুঁড়ি সকলের এক রকম হয় না। তাই তার সমাধানও এক হয় না। কারও ভুঁড়ি কিছুতে কমেছে শুনে আপনিও তাই করতে সুরু করলেন কিন্তু লাভ হল না। আপনিও ক্লান্ত হয়ে ভাবলেন এই ভুঁড়ি কমান নয়। আসলে ব্যাপার তা নয়। আপনাকে ভুঁড়ি কমানোর উপায় জানার আগে জানতে হবে আপনার ভুঁড়ির ধরণ এবং কারণ কি। তার পরে তার সমাধান। এরকম কয়েকটি ভুঁড়ির নমুনা দেওয়া হল। দেখুন কোনটি আপনার সমস্যা।
১) নিচু ভুঁড়ি
আপনার ভুঁড়ি যদি নিচু হয়ে থাকে, তবে তার মানে হতে পারে আপনি বেশ স্ট্রেসে আছেন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা নিজেদের কাজের ব্যাপারে খুব খুঁতখুঁতে হন তাদের থাকে এমন ভুঁড়ি। এই ভুঁড়ির প্রধান কারণ হল বদহজম। স্ট্রেসের কারণে তাদের ঘুম ও খাওয়ায় অনিয়ম হয় ফলে হয় বদহজম। এর থেকে পেট ফাঁপে যার ফলে ভুঁড়ি তৈরি হয়। হাসিখুশি মানুষের তুলনায় তাদের শরীরে কর্টিসল নামের হরমোন বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমেই রিল্যাক্স করতে হবে। কমিয়ে ফেলতে হবে জাঙ্ক ফুড খাওয়া এবং ক্যাফেইন দিয়ে তৈরি পানীয় পান। কিন্তু তাই বলে খাওয়া বাদ দেবেন না। বার বার অল্প করে খাবার খেতে থাকুন। ধূমপানের অভ্যাস থাকলে সেটাও বাদ দিন।
২) খুব নিচু ভুঁড়ি
সাধারণত রোগা মানুষের এমন ভুঁড়ি থাকে যা বেশি নিচু। এ থেকে বোঝা যায় তারা পরিশ্রম বেশি করেন। বিশেষ করে নারীদের এই ভুঁড়ি বেশি দেখা যায়। যারা নিজেদের যত্ন নেন না বা নেওয়ার সময় পান না পরিশ্রমের জন্য, তাদের ভুঁড়ি নিচু হয়ে থাকে। তাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাওয়ার অভ্যাসও দেখা যায়।
এই ভুঁড়ি থাকলে প্রথমেই আপনার খাদ্যভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। ব্যালান্সড ডায়েট অনুযায়ী খাওয়া দাওয়া করতে হবে। খাদ্যে বৈচিত্র্য আনুন। আর সময় পেলে ব্যায়াম করুন। নিজের প্রতি যত্ন নিন।
৩) টায়ারের মতো ভুঁড়ি
দিনের বেশীরভাগ সময়ে বসে বসে কাটালে শরীরের চারপাশে বেড় দেওয়া এমন টায়ারের মতো ভুঁড়ি তৈরি হয়। এমন পেট দেখলেই মনে হয় মানুষটি মোটেই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করেন না। কিন্তু এমন ভুঁড়ি কমিয়ে ফেলা আসলে সব থেকে বেশি সহজ।
এই ভুঁড়ি হয়েছে মানে আপনি সম্ভবত বেশি চিনি অথবা শর্করা খান বেশি। এছাড়াও আপনি মন খারাপ থাকলে খেতে থাকেন। এসব কারণে আপনার ভুঁড়ি বাড়ে। একটু সচেতন হয়ে চলুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খান, ফলমূল খান বেশি করে। ভুঁড়ি কমতে সময় লাগবে না।
৪) ফাঁপা ভুঁড়ি
ঘুম থেকে উঠে দেখলেন পেট স্বাভাবিক। অথচ দিনের শেষে দেখলেন পেট ভারী হয়ে গিয়েছে, পোশাকের ওপর দিয়ে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ভুঁড়ির অবয়ব। এর মানে আপনার ফাঁপা ভুঁড়ি। এটা মোটা বা রোগা দুই ধরণের মানুষেরই হতে পারে। এর কারণ হল মূলত হজমে সমস্যা।
অনেক সময়ে কিছু কিছু খাবার আমাদের সহ্য হয় না অথচ আমরা এ ব্যাপারে খেয়ালও করি না। যেমন অনেকেরই দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেলে প্রচন্ড গ্যাস হয়, তাতে ভুঁড়ি বাড়ে। অথচ তিনি দিনের পর দিন দুধ-চা পান করে চলেছেন। আবার কারও কারও বিশেষ কোনও সবজি বা মাংস হজম করতে সমস্যা হতে পারে। এই খাবারগুলোকে চিহ্নিত করুন এবং হজমে সমস্যা হয় এমন খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিন। তাহলেই পেট ফাঁপা কমে যাবে।
-কলকাতা ২৪ অবলম্বনে