প্রথম কোনো কিছুই ভোলা যায় না! প্রথম আয় তো অবশ্যই নয়। বলিউডের প্রথম সারির তারকারা এখন দেদারসে অর্থ উপার্জন করেন। একেকজন একটি মাত্র ছবি কিংবা বিজ্ঞাপন থেকে নেন লাখ লাখ থেকে কোটি কোটি টাকা। তবে প্রত্যেকেরই জীবনের প্রথম আয় ছিলো সাধারণ মানুষের মতোই। অবশ্য তাদের বেশিরভাগই দৈনন্দিন জীবনযাপনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পেশায় জড়িয়েছিলেন। অনেকে রেস্তোরাঁয় চাকরি করেছেন। কেউ কেউ নিজের প্রথম উপার্জন তুলে দিয়েছেন মায়ের হাতে, কেউবা মায়ের বন্ধক রাখা গহনা ছাড়িয়ে এনেছেন। বলিউডে কয়েকজন তারকা জানিয়েছেন তাদের প্রথম আয়-রোজগারের স্মৃতি।
আমির খান (সহকারী পরিচালক)
নায়ক হওয়ার আগে আমির খান সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করতেন। তখন তাকে প্রতি মাসে দেওয়া হতো ১ হাজার রুপি। এরপর থেকে মায়ের কাছ থেকে পকেট খরচ নেওয়া বন্ধ করে দেন তিনি। ১২ বছর বয়সে টেনিস টুর্নামেন্টে শিরোপা জেতার টাকা ও ট্রফি সবই মায়ের হাতে তুলে দেন আমির। তিনি মাকে প্রতি মাসে বলতেন, ‘আমার জমানো পুরস্কার থেকে কিছু টাকা দাও যেন সহকারী পরিচালক হিসেবে পাওয়া রোজগার দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারি।’
শাহরুখ খান (উপস্থাপক)
ভারতের দিল্লিতে এক রাতে পঙ্কজ উদাসের গজল কনসার্টের উপস্থাপক ছিলেন শাহরুখ খান। এজন্য তিনি পেয়েছিলেন ৫০ রুপি। জীবনের প্রথম আয় দিয়ে আগ্রায় তাজমহল দেখতে ট্রেনে চড়ে বসেন তিনি। সেই স্মৃতি আজও ভোলেননি শাহরুখ।
বিপাশা বসু (কিশোরী মডেল)
কলকাতায় স্কুলে পড়ার সময় সংগীতা চোপড়া র্যাম্প শোর জন্য নির্বাচিত হন বিপাশা বসু। ১৫ বছর বয়সে প্রথম কাজ করেই তিন হাজার রুপি পেয়েছিলেন তিনি। পুরো টাকাটাই তিনি তুলে দেন মায়ের হাতে।
ইরফান খান (টিউশন শিক্ষক)
ভারতের জয়পুরে ইরফান খানের জন্ম। ওই শহরের স্কুল শিশুদের ঘরে ঘরে গিয়ে শিক্ষকতা করতেন তিনি। প্রতিটি ছাত্রের কাছ থেকে সম্মানী পেতেন ২৫ রুপি করে। ইরফান তখন হাইস্কুলের ছাত্র। তিনি বলেন, ‘ওই সময়ে পড়াশোনা করিয়ে রোজগার করার মধ্যে ছিলো অন্যতম উত্তেজনা।’
জ্যাকি শ্রফ (চীনাবাদাম বিক্রেতা)
দেওয়ালে পোস্টার লাগানো থেকে শুরু করে চীনাবাদাম বিক্রির মতো অদ্ভুত কাজ করে টাকা পেতেন জ্যাকি শ্রফ। তবে কোন কাজের জন্য কতো টাকা পাচ্ছেন তা মুখ্য ছিলো না তার কাছে, কাজ করছেন এটাই বড় কথা! তিনি বলেন, ‘তখন আমার বয়স ১৪ বছর। সে সময় মা আর আমার জন্য আয় করতাম।’
নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী (রসায়নবিদ)
ভোপালের এক পেট্রোকেমিক্যাল কারখানার প্রধান রসায়নবিদ হিসেবে প্রথম চাকরি করেছেন নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী। তার পড়াশোনার জন্য মা নিজের সব অলঙ্কার বন্ধক রেখেছিলেন। তাই চাকরির প্রথম দুই মাসের বেতন ৪ হাজার রুপি দিয়ে মায়ের অলঙ্কার ছাড়িয়ে আনেন তিনি।
রণদীপ হুদা (ডেলিভারি বয়)
অস্ট্রেলিয়ার ব্যালারাটে ইন অব খঙ নামে একটি চাইনিজ রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন রণদীপ হুদা। এজন্য ঘণ্টাপ্রতি ৮ ডলার আর প্রতিবার ক্রেতাদের হাতে হাতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি পেতেন দেড় ডলার।
কালকি কোচলিন (ওয়েট্রেস)
ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে পড়াশোনা করেছেন কালকি কোচলিন। দাদা-দাদি তার টিউশন ফি চালাতেন। কিন্তু এক ইতালিয়ান ক্যাফেতে ওয়েট্রেস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। চার সপ্তাহ কাজ করে ৪০ পাউন্ড এসেছিলো তার হাতে। এ ছাড়া লন্ডনের ইউজিসি সিনেমায় পপকর্ন ও টিকিট বিক্রির কাজ করেছেন কালকি। ২০১১ সালে ওই প্রেক্ষাগৃহে নিজের অভিনীত ‘গার্ল ইন ইয়েলো বুটস’ ছবিরি প্রিমিয়ারে তিনি আড্ডা দিয়েছেন একসময়ের টিকিট বিক্রেতা সহকর্মীদের সঙ্গে।
You must be logged in to post a comment.