‘জয় হবেই হবে’র আশফাক রানা

আশফাক রানা এ সময়ের একজন প্রতিশ্রুতিশীল মডেল। এরইমধ্যে ভালো কিছু কাজের মাধ্যমে দর্শকের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছেন। এই তরুন তূর্কিকে নিয়ে লিখেছেন মাসিদ রণ।

সিলেটের ছেলে আশফাক রানাকে অনেকেই প্রথম দেখায় পাকিস্তানি ভেবে ভুল করেন। এতে মানুষেরই বা দোষ কি? তার গায়ের রঙ এমনকি শারিরিক গড়নও পাকিস্তানিদের মতো। বিশেষ এই গুনটির জন্য ছোটবেলা থেকেই বন্ধুমহলে তার আলাদা একটা গ্রহনযোগ্যতা ছিল। এটাই মূলত রানাকে একজন মডেল-অভিনেতা হতে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে। আশফাক রানা এরইমধ্যে বেশকিছু মানসম্মত বিজ্ঞাপনের মডেল হয়ে মিডিয়ায় নিজের সম্ভাবনার পরিচয় দিয়েছেন। তবে জনপ্রিয় গায়িকা পড়শীর ‘জয় হবেই হবে’ শিরোনামের গানে তার সঙ্গে মডেল হয়ে সাধারন দর্শকের কাছেও পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। তবে এর আগেও তিনি আরেক জনপ্রিয় গায়ক হৃদয় খানের ‘ভালোবাসি তোমায়’ গানটির মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসাবে কাজ করেন। মিডিয়াতে কাজের বয়স বেশিদিন হয়নি। এই অল্প সময়ে ভালো কাজ করে মানুষের যে সাড়া পেয়েছেন, তাতে নিজেকে এই অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করতে এখন তিনি বদ্ধপরিকর। বর্তমানে থাকছেন বাবা-মায়ের সঙ্গে জন্মশহর সিলেটে। তবে ভালো কাজ হলেই ছুটে আসেন ঢাকায়। এই নিয়ে মজার এক অভিজ্ঞতাও আছে তার। সেটি ছিল দুই বছর আগের কথা। আশফাক রানা সেবারই প্রথম মিউজিক ভিডিওতে কাজের প্রস্তাব পান। গানটি ছিল তরুন দুই কণ্ঠশিল্পী বাপ্পী ও নিশির গাওয়া ‘চাই শুধু তোমাকে’। এর গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিং যেদিন শুরু হয়েছিল তার আগের দিনই রানার পরীক্ষা শেষ হয়। তাই আগেভাগে তিনি ঢাকায় আসতে পারেননি। তবে শুটিংয়ের আগের রাতেই তিনি চড়ে বসলেন বাসে। ঢাকায় পৌছলেন ভোর পাঁচটায়। ছয়টায় সোজা শুটিং স্পটে হাজির হলেন। যথারীতি মেকাপ-শট নিয়ে দুপুর গড়িয়ে দিলেন। এরপর জানতে পারলেন তার শট হতে আরও আধ ঘন্টা বাকি। টানা ৪৮ ঘন্টা ছিলেন নির্ঘুম। রানাকে আর পায় কে। ভাবলেন আধাঘন্টা একটু জিরিয়ে নিই। কিন্তু যখন ঘুম থেকে উঠলেন, দেখেন কোন ফাঁকে তিন ঘন্টা কেটে গেছে। ততক্ষনে ইউনিটের সবাই তাকে খুজে খুজে হয়রান। পরে শিল্পী বাপ্পীর ডাকে সজাগ হন তিনি।
রানা মিডিয়াতে প্রথম কাজ করেন গ্রামীনফোন সহজ প্যাকেজের বিজ্ঞাপনে। তবে মডেল হিসাবে পায়ের তলার মাটি শক্ত হয় প্রান ঝালমুড়ির একটি ফানি টিভিসি করে। এতে দেখা যায় তিনি বাইরের খোলা খাবার খেয়ে পেটের ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন। ডাক্তার তার অপারেশন করতে গিয়ে পেট থেকে বই-পত্র, খেলনা সাপ, ব্যাট-বল হাবিজাবি অনেককিছুই বের করেন। পরে ব্যাকগ্রাউন্ডে শোনা যায় প্রান ঝালমুড়ি খেলে এমন হবে না।
এছাড়া সম্প্রতি তিনি করেছেন আরএফএল টুলের একটি বিজ্ঞাপন। এতে তার বিপরীতে আছেন ‘ওয়াও বেবি ওয়াও’ ছবির নায়িকা মারিয়া চৌধুরী। সামনেই এটি প্রচারে আসবে। পড়শীর মিউজিক ভিডিওটি পরিচালনা করেছিলেন চন্দন রয় চৌধুরী। তখনই তিনি রানার কাজে মুগ্ধ হয়েছেন। তাই সামনে আরও কয়েটি মিউজিক ভিডিওতে রানাকে মডেল করেছেন তিনি। তবে সে সম্পর্কে শুটিং না হলে কিছুই বলতে পারবেন না রানা।
শুধু বিজ্ঞাপন আর মিউজিক ভিডিওতেই আটকে নেই রানার পথচলা। করে ফেলেছেন দুটি টেলিছবিও। এরমধ্যে তিনি উল্লেখ করলেন মীর আসাদুজ্জামানের পরিচালনায় ‘কমপ্লিকেটেড’-এর কথা। এখানে তিনি জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী শাহতাজের সঙ্গে কাজ করেছেন। এছাড়া আছেন চিত্রনায়ক নিরব ও লাক্সতারকা ঈশানা। এটিও শিগগিরই প্রচার হবে টিভিতে।

সদাহাস্যজ্জ্বল ও সুদর্শন এই মডেলের ইচ্ছা আগামি নিজেকে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ি এবং পাশাপাশি একজন জনপ্রিয় সেলিব্রেটি হওয়া। বড়পর্দায় কাজ করাও তার একটা স্বপ্ন। তার স্বপ্নপূরনের সাথি হয়ে আমরাও তাকে শুভ কামনা জানাই।