প্রতিভা আর পরিশ্রম- এ দুটোর মিশেল যে কোন মানুষকে নিয়ে যেতে পারে সাফল্যে সর্বোচ্চ শিখরে। সেই সাথে থাকতে হবে তার ইতিবাচক চিন্তা করার অভ্যাস। দৈনন্দিন জীবনের ছোটখাটো কিছু কিছু চিন্তা পার্থক্য তৈরি করে দেয় প্রতিটি মানুষের সফলতায়। সামান্য কিছু ইতিবাচক চিন্তার ফলে একজন মানুষ হয়ে উঠতে পারে আরো দশজনের চাইতে অনন্য এবং সফল। তবে কেবল এই ইতিবাচক চিন্তাই নয়, মানুষের জীবনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে তার নেতিবাচক চিন্তারও। সবক্ষেত্রে এগিয়ে থাকা একজন মানুষকে পিছিয়ে নিতে কেবল একটি নেতিবাচক চিন্তাই যথেষ্ট। সেটা হতে পারে তার নিজের সম্পর্কে, নিজের কাজ কিংবা চারপাশের মানুষগুলো সম্পর্কেও। আর আপনার মনের ভেতরে চলতে থাকা এমনই কিছু নেতিবাচক চিন্তার কথা থাকল এখানে যেগুলো কঠিন করে ফেলতে পারে আপনার চলার রাস্তাকেই।
১. আমি কোন কাজের না
মাঝে মাঝে চারপাশের সমাজ, পরিবেশ, পরিবার আর পৃথিবী আমাদেরকে প্রতি পদে মনে করিয়ে দিতে থাকে যে, কিছু মানুষের জন্মই হয়েছে কোন কারণ ছাড়া। তারা পৃথিবীর কোন কাজে আসে না, পৃথিবীও তাদেরকে চায়না। আর সেই মানুষগুলোর ভেতরে পড়েন আপনি। ব্যাপারটা এতটাই প্রবল যে একটা সময় আমাদের চিন্তর ভেতরেও ঢুকে যায় সেটা। ফলে কোন কাজেই সাফল্য আসেনা। কিন্তু অন্যান্য আরো অনেক নেতিবাচক চিন্তার মতনই এ চিন্তাটিও কিন্তু পুরোটাই অহেতুক। প্রতিটি মানুষ ভালো ছাত্র বা ভালো গায়ক- নায়ক হননা। কিন্তু তাও প্রতিটি মানুষেরই থাকে নিজস্ব কিছু প্রতিভা। থাকে এমন একটা ক্ষেত্রে যেখানটাতে সে সেরা। আর তাই এই চিন্তাটি মাথায় ঢোকার আগেই ভাবুন যে আপনিও নিশ্চয়ই কোন কারণেই এসেছেন পৃথিবীতে। আপনিও পারবেন!
২. এখানে অনেক বেশি প্রতিযোগিতা
ব্যবসা কিংবা কোন ধরনের কাজ শুরু করার আগেই এ চিন্তাটি মাথায় আসে অনেকের। আর সেটা হল- এখানে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি! তো, তাতে কি হয়েছে? একবার ভাবুন। প্রতিযোগিতা সবক্ষেত্রেই আছে। কিন্তু এই ভয়ে সবসময়েই বসে থাকলে কেবল পিছিয়েই পড়বেন আপনি। আর কিছু ঘটবে না। কারণ দিনকে দিন প্রতিযোগিতা কমবে না, কেবল বাড়বে!
৩. অনেক সময়ের কাজ
এটা এটা সত্যি যে সময় মূল্যবান। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সেটাকে একেবারে জমিয়ে রাখবেন আপনি। যদিও সেটা জমানো যায়না। সময় বেশি লাগবে ভেবে যদি আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হন আপনি, তাহলে কিন্তু সেটা বসে থাকবে না। সময় চলে যাবে সময়ের মতন করেই। আর তাই যখন যেটা করতে হবে বলে ভাবছেন, শুরু করে ফেলুন। নাহয় অনেকবছর পর হয়তো নিজের এমন নেতিবাচক চিন্তর মাশুল নিজেকেই দিতে হবে আপনার।
৪. আমার আর কোন স্বপ্ন নেই
এখন ব্রেক আপ, চাকরিতে ব্যর্থতা, পারিবারিক অশান্তি- এমনতরো হাজারটা সমস্যার মুখোমুখি হবার পর মানুষের মনে এই নেতিবাচক চিন্তাটি বারবার ঘা মারে। কিন্তু সত্যিই কি এটা বাস্তবে হয়? একটা মানুষের জীবনে কি আসলেই স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় কখনো? বর্তমানে কোন স্বপ্ন না পেলে ঘুরে তাকান অতীতে, দেখুন ভবিষ্যতে নিজেকে কেমন দেখতে চান আপনি, কি করতে ভালো লাগছে আপনার। কাজ করুন। নিজের ভালোলাগার জিনিসগুলো করুন। স্বপ্নের শুরু আর পরিপূর্ণতা চলে আসবে এমনিতেই।
৫. অসম্ভব
এক শব্দের এই কথাটি প্রায়ই চলে আসে আমাদের মনে। কিন্তু সত্যি বলতে কখনোই কিছু একেবারে অসম্ভব নয়। হয়তো সেটা অর্জন করা কঠিন, কিন্তু একেবারে অসম্ভব নয়। অনেকে নিজের শক্তি, বয়স আর পরিস্থিতিকে বিবেচনা করে কিংবা না করে প্রথমেই বলে ফেলেন অসম্ভব। কিন্তু এমনটা চলতে থাকলে কেবল আপনার নয়, অন্যদেরও মনে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে আপনাকে নিয়ে।
৬. আমি ব্যর্থ
অনেকের মনেই, বিশেষ করে বারবার প্রতারণার শিকার হয়ে কিংবা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে এ কথাটি চলে আসে বারবার। কিন্তু ঠিক কতবার চেষ্টা করেছেন আপনি? ইতিহাসে ধৈর্য্যের অনেক নমুনা আছে। সেই রবার্ট ব্রুস থেকে শুরু করে স্টার ওয়ার চলচ্চিত্রের পরিচালককেও হতে হয়েছে বারবার ব্যর্থ। কিন্তু তাও থেমে যাননি তারা আর হয়েছেন সফল। তাদেরকে অনুসরণ করুন।
-প্রিয়.কম অবলম্বনে