লেগুন সেইন্ট মার্ক্স স্কয়ারে অবস্থিত এই দ্বীপের নাম ‘পোভেগ্লিয়া ভেনিস’৷ নির্জন দ্বীপে থাকার মধ্যে রয়েছে কেবলমাত্র একটি মঠ ও গোয়াল ঘর৷ আর নাকি রয়েছে অতৃপ্ত আত্মা! ১৭ একর জায়গা জুড়ে পোভেগ্লিয়া ভেনিস দ্বীপ সম্পর্কে নানান ভৌতিক গল্প লোকমুখে শোনা যায়৷ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এই দ্বীপ দখলের জন্য চতুর্দশ শতকে ভেনেটিয়ানস ও জেনোইসদের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধে৷ যুদ্ধে ব্যবহৃত কামান ও বন্দুকের শব্দ আজও সে দ্বীপে নাকি প্রতিধ্বনিত হয় রাতের আধাঁরে। সেদিনের যুদ্ধে জয়ী হয় ভেনিস সরকার৷ অষ্টাদশ শতকে দ্বীপটি জাহাজবন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হত৷ এর কয়েক বছর পর ওই বন্দরে থাকা দুটি জাহাজে প্লেগের আবির্ভাব হয়৷ শয়ে শয়ে মানুষ মারা যেতে থাকে৷ চিকিৎসা করেও লাভ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বন্দরটি সিল করে দেওয়া হয়৷
এরপর ১৯২২ সালে একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয় ওই অভিশপ্ত দ্বীপে৷ কিন্ত হাসপাতালে থাকা রোগীরা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ ওঠে৷ লোকমুখে জানা যায়, প্লেগে মৃতদের অতৃপ্ত আত্মা নাকি অন্যের আধিপত্য মেনে নিতে পারেনি৷ একে একে রোগী থেকে কর্মী সকলকে উন্মাদ হতে থাকে৷ লোকের এই বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয় যখন খোদ হাসপাতালের পরিচালক উন্মত্ত হয়ে হাসপাতালেরই ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন৷
লোকশূণ্য এই দ্বীপ পর্যটকদের জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও একজন মার্কিন উপস্থাপক দ্বীপটিতে ভ্রমণে আসেন৷ নিষিদ্ধ হাসপাতাল নিয়ে একটি রোমাঞ্চকর সিরিজ তৈরি করেন মার্কিন টেলিভিশনে এক ট্রাভেল শোয়ের জন্য৷ ইতালি কর্তৃপক্ষ এবার চাইছে হাসপাতাল ভেঙে একটি বিলাসবহুল হোটেল প্রস্তুত করতে৷ ঢেলে সাজান হবে পোভেগ্লিয়া ভেনিসকে৷ দ্বীপের মূল ব্যারাক দালানটি নিলামের জন্য কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ বাদবাকি ছোটোখাটো সম্পত্তি মিলিয়ে সেখান থেকে আয় হবে আনুমানিক ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷তবে ভীতি কাটিয়ে কে এই দ্বীপের রাজা হবে সেটাই এখন দেখার৷ নিলামের আয় থেকে ইটালির আর্থিক মন্দায় সুদিন আসবে বলে আশাবাদী ইটালি সরকার৷
– অনলাইন ঢাকা গাইড অবলম্বনে