হাবিবুল বাশার
অাজকের বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান হাইভোল্টেজ ম্যাচটি উপভোগ করেছি আমরা। যদিও খেলা দেখে হতাশ হয়েছি। পাকিস্তানের কাছ থেকে অারও ভালো পারফরম্যান্স প্রত্যাশা করেছিলাম। অাজকের ম্যাচটি বড্ড একপেশে হয়ে গেল। পাকিস্তান পুরো ম্যাচেই স্পটলাইটের বাইরে ছিল।
অাগেই বলেছি দল হিসেবে ভারত সবসময়ই পাকিস্তানের তুলনায় বেশ শক্তিশালী। ভারতের জাতীয় দল অস্ট্রেলিয়ায় খেলছে অনেকদিন ধরেই। ব্যাটিং ডিপার্টমেন্টতো বিশ্বমানেরই, সঙ্গে বোলিংও খারাপ না। সব মিলিয়ে ম্যাচটিতে দল হিসেবে ভারতই বেশ এগিয়ে ছিল।
তারপরেও আশা করেছিলাম, কারণ পাকিস্তান এমন একটা দল যাদের নিয়ে অাগে থেকে কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়। বিশেষ করে প্রস্তুতি ম্যাচে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ওরা যেভাবে জিতেছে সেই ম্যাচ দেখেই ভেবেছিলাম এই বিশ্বকাপে ওরা হয়তো কিছু করে দেখাতে পারবে। অাজকের ম্যাচটি যেভাবে হলো তাতে ভারতই একপেশে খেলেছে। পাকিস্তানকে ম্যাচে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এই ম্যাচে ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় দিকটি হলো বিরাট কোহলির ফর্মে ফেরা। বেশ কয়েকদিন ধরেই বিরাট রান পাচ্ছিল না। মনে করা হয়েছিল পাকিস্তানের জন্য বিষয়টা সুখবর বয়ে নিয়ে আসছে। কিন্তু কোহলি উল্টো পাকিস্তানকে ম্যাচ থেকে বের করে দিয়েছে। বিরাট যখন রান পায় না তখন সে বড় স্কোর করেই ফর্মে ফিরে। একজন বড় মাপের ক্রিকেটারের এটাই সবচেয়ে বড় গুণ। সে আবার নিজেকে প্রমাণ করলো। দলের যখন প্রয়োজন তখনই সে সেঞ্চুরি করে ফর্মে ফিরেছে। ভারতের জন্য আরও সুখবর শিখর ধাওয়ানের রানে ফেরা। দেখা যাক ভারত শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টে কতদূর যায়।
পাকিস্তানের দিকগুলো যদি বিবেচনা করি তাহলে বলতে হবে পরের ম্যাচের জন্যে পাকিস্তান নেওয়ার মতো কিছুই পেল না। সামনে যেহেতু তাদের আরও ম্যাচ আছে রয়েছে তাই কামব্যাক করার মতো সুযোগ এখনও আছে। পাকিস্তানকে পরবর্তী ম্যাচে ভালো করতে হলে নির্ভর করতে হবে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ওপর। কারণ তাদের মিডল অর্ডারে বা লোয়ার অর্ডারে দ্রুতগতিতে রান তোলার মতো আফ্রিদি ছাড়া আর বিশেষ কেউ নেই। সে হয়তো মাঝে মাঝে রান করবে কিন্তু প্রতি ম্যাচে তার ওপর ভরসা রাখা যায় না।
মিসবাহ আজও ভালো করেছে কিন্তু টপ অর্ডার থেকে রান না আসলে ম্যাচে ফেরা পাকিস্তানের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে।
ম্যাচে উমর আকমলের আউটটা নিয়ে বলবো এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। ক্রিকেটটা আসলে এমনই। মাঝে মাঝে অপ্রত্যাশিতভাবে অাম্পায়ররা বড় ভুল করে বসেন। এমন হয়। তবে আমার মনে হয় উমর আকমল ওভাবে আউট না হলেও পাকিস্তান খুব বেশিদূর যেতে পারতো না।
আজকে শুরুতে আরেকটা ম্যাচ দেখলাম জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে। দক্ষিণ আফ্রিকার এবারের দলটা আসলেই একটু অন্যরকম ক্রিকেট খেলছে । টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা অনেক বড় ইনিংস খেলছে। যদিও যারা রানে ছিল তারা আজ ব্যর্থ। তারপর তারা প্রায় সাড়ে তিনশ’র কাছাকাছি রান করতে পেরেছে। কারণ ডুমিনি ও মিলার অসাধারণ ব্যাটিং করেছে।
এবার সবাই বলছে দক্ষিণ আফ্রিকা এ বিশ্বকাপের সবচেয়ে ভালো দল। আজকে ব্যাটিং দেখে তার প্রমাণ পাওয়া গেলো।
তবে ওদের বোলিং দেখে আজ একটু হতাশ হয়েছি। ভেবেছিলাম ওদের বোলাররা খুব ভালো বল করবে। আজকে একটু অবাক হয়েছি। বিশেষ করে ওদের পেসাররা যে মানের বোলিং করে আজ সেরকম মানের হয়নি। স্টেইন হতাশ করেছে। আমি জানি না, প্রথম ম্যাচ বলেই তারা বোলিংয়ে একটু নড়বড়ে ছিল কিনা।
অাজকে ভালো না হলেও ওদের এবারের দলের বোলিং লাইন অাপ কিন্তু বেশ শক্তিশালী। আগে ফাস্ট বোলাররা উইকেট নিত। কিন্তু এখন তাদের হাতে একজন ভালোমানের স্পিনার রয়েছে যে কিনা নিয়মিত উইকেট নিতে পারে। যেমন-ইমরান তাহির। অাজকে খুবই ভালো বোলিং করেছে।
এই ম্যাচটির শুরুতে জিম্বাবুয়ে ৮৩ রানে ৪ উইকেট তুলে নেওয়ায় মনে হয়েছিল দিনটা বুঝি জিম্বাবুয়ের। প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়ে চাপা পড়েও ওরা বেশ ভালো ব্যাটিং করছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রোটিয়াদের বোলিংয়ের কাছে ওরা প্রতিরোধ দিয়ে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেনি। তারপরও জিম্বাবুয়ে ভালো পারফর্ম করেছে।
গত দুইদিনে বিশ্বকাপে যে কয়টি ম্যাচ দেখলাম প্রায় সবগুলোই এক পেশে ম্যাচ ছিল। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ দেখতে পাইনি।