জেনে নিন

তিমি মাছ ঘুমায় কখন?


sisirতিমি মাছ স্তন্যপায়ী প্রাণী। পানিতে বসবাস হলেও এরা মানুষের মতোই বাতাসে শ্বাস নেয়। এজন্য কিছুক্ষণ পর পর এদের পানির উপর ভেসে উঠতে হয়। সুতরাং এরা যদি পানির মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে, তাহলে দম বন্ধ হয়ে মারা যাবার সম্ভাবনা থাকে। তাই প্রশ্ন, এরা তাহলে ঘুমায় কখন?
অন্যান্য মাছ ফুলকার সাহায্যে পানির মধ্যে থেকেই প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে। তিমির শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের জন্য রয়েছে বিশেষ এক ব্যবস্থা। মানুষের যেমন প্রতি মুহূর্তে নিঃশ্বাস নিতে হয়, তিমির কিন্তু সেরকম নয়। এরা কম করে হলেও ৩০ মিনিট পর্যন্ত দম না নিয়ে থাকতে পারে। সুতরাং ভাবা যেতে পারে এরা ফাঁকে ফাঁকে ওই আধঘণ্টা করে হয়তো ঘুমিয়ে নেয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তেমনটি সম্ভব নয়। মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয়, অর্থাত্ আমি চাই বা না চাই ফুসফুস নিজের মতো স্বাধীনতাভাবে কাজ চালিয়ে যায়।
কিন্তু তিমির শ্বাস-প্রশ্বাস স্বয়ংক্রিয় নয়, সেটা তাদের সচেতন সিদ্ধান্তের বিষয় হওয়ায় তিমি যদি ঘুমিয়ে পড়ে এবং সময়মতো না জাগে, তাহলে দম আটকে মারাও যেতে পারে। এই বিপদের সমাধান হিসেবে তিমির মস্তিষ্কের অর্ধেক কিছুক্ষণ ঘুমায়, বাকি অর্ধেক ঘুমায় পরের পালায়। তাদের অন্তত অর্ধেক মস্তিষ্ক সবসময় জেগে থাকে, তাই তারা শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ঘুমের মধ্যেও প্রয়োজনীয় সময়ে ভেসে ওঠে। মাঝে-মধ্যে তিমি মাছকে পানির প্রায় উপরিতলে হালকাভাবে নিস্তেজ অবস্থায় ভেসে থাকতে দেখা যায়। এটাই তাদের ঘুমন্ত অবস্থা।
তিমি মাছের ঘুমের এ বিষয়টি বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন ইলেকট্রো এনসেফালোগ্রাফির (ইইজি) মাধ্যমে। এই পদ্ধতিতে তিমির মাথায় তার লাগিয়ে মস্তিষ্কে বিদ্যুতের মাত্রা নির্ণয় করা হয়। এভাবে প্রাপ্ত ইইজির ফলাফলে দেখা গেছে ঘুমের সময় তিমি মাছের অর্ধেক মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে। বলা যায়, আমরা যেমন কখনো কখনো আধা ঘুম আধা জাগরণের মধ্যে থাকি, তিমির ঘুমও সেরকম।