বাথরুমের পর রান্নাঘরই হচ্ছে গৃহের সেই স্থান, যা নোংরা হয় সবচাইতে বেশী। বিশেষ করে যাদের বাড়িতে গৃহকর্মী নেই, সকল কাজ নিজেকেই করতে হয়, তাঁদের জন্য রান্নাঘর ঝকঝকে তকতকে রাখা আসলেই ভীষণ কষ্টকর একটি কাজ। কেননা তেল, ময়লা, চিটচিটে ভাব আর দুর্গন্ধের সমস্যা এই রান্নাঘরেই যে হয় সবচাইতে বেশী! আবার পরিষ্কার রাখা ছাড়া উপায়ও নেই, কেননা এই রান্নাঘরের ওপরেই নির্ভর করে বাড়ির সকলের স্বাস্থ্য। কী করবেন? জেনে নিন এমন কিছু দারুণ টিপস, যেগুলো মেনে চললে বিনা কষ্টের আপনার রান্নাঘোর থাকবে পরিষ্কার। কাজ করবেন ঠিকই, কিন্তু নোংরা হবে না মোটেও। আর নোংরা না হলে পরিষ্কারের ঝামেলাও নেই!
১) রান্নাঘর সবচাইতে বেশী নোংরা হয় এঁটো থালাবাসনে কারণে। সিংকে কখনোই থালা বাসন জমতে দেবেন না। যখন যা হচ্ছে সাথে সাথে পরিষ্কার করে ফেলুন। একই সাথে সিংকটাও ধুয়ে রাখবেন প্রতিবার। এই একটি কাজেই দেখতে পাবেন আকাশ পাতাল পার্থক্য। না রান্নাঘর নোংরা হবে, না হবে বাজে গন্ধ।
২) কখনোই রান্নাঘরের মেঝেতে কুটোবাছা করতে বসে যাবেন না। বাড়িতে অনেক পুরনো খবরের কাগজ থাকে, যেগুলো আসলে একসময় ফেলেই দেয়া হয়। এই খবরের কাগজ বিছিয়ে নিয়ে কোটাবাছা করুন। সবজির খোসা হোক বা মাছ-মাংসের রক্ত ও উচ্ছিষ্ট অংশ, সবই এই খবরের কাগজের ওপর দিয়ে যাবে। কাজ শেষ হলে কাগজসহ উঠিয়ে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিন। দেখলেন তো, মেঝে একটুও ময়লা হলো না। আপনিও মেঝে মোছার যন্ত্রণা থেকে বেঁচে গেলেন।
৩) বাজারে হরেক রকম মব কিনতে পাওয়া যায়। আপনার সুবিধা মত সাইজের একটি মব কিনে রাখুন। রান্নাঘরে পা দেয়া হলেই বেড়িয়ে যাওয়ার সময় মবটি দিয়ে হালকা করে মুছে ফেলুন। এই কাজে আপনার সময় লাগবে মাত্র ১ মিনিট। কিন্তু প্রত্যেকবার অল্প ময়লা হলেই যদি মব দিয়ে মুছে ফেলেন, তাহলে বেশি ময়লা হয়ার সমস্যাই তৈরি হবে না।
৪) রান্নাঘরে অবশ্যই ঢাকনা দেয়া ময়লার ঝুরি বা বালতি ব্যবহার করবেন। তবে সরাসরি বালতি বা ঝুড়িতে ময়লা ফেলবেন না। ভেতরে একটি পুরনো কাগজ বা প্লাস্টিকের প্যাকেট বিছিয়ে সেটার মাঝে ময়লা ফেলুন। এতে আপনার ময়লার ঝুরিও নোংরা হবে কম। আর রোজ ময়লার ঝুরির আশেপাশে একটু পোকা মারার স্প্রে ছিটিয়ে দিন। এতে ময়লার ঝুড়িতে পিঁপড়াও ধরবে না।
৫) রান্নাঘরে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে চুলার আশেপাশে তেলের দাগ ও তেল চিটচিটে ভাব। গরম পানি ও সাবন দিয়ে খুব করে না ঘষলে এই দাগ উঠতে চায় না। তবে একে দূর করার বুদ্ধিও আছে। প্রত্যেকবার চুলার কাজ শেষ হলে চুলাটি একটি কাপড় বা টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন। ভালো এক বোতল গ্লাস ক্লিনার বা ফ্লোর ক্লিনার কিনে রাখুন। দিন শেষে একবার কাপড়ে বা টিস্যুতে ক্লিনার লাগিয়ে চুলা ও এর আশেপাশের সমস্ত জায়গা (দেয়াল সহ) মুছে ফেলুন। দেখবেন, আপনার চুলার ধার সর্বদাই থাকবে ঝকঝকে।
৬) বটি বাদ দিয়ে চপিং বোর্ড ও চাকু ব্যবহার করা অভ্যাস করুন। রান্নাঘর অনেকটাই কম ময়লা হবে।
৭) মাছ মাংস ইত্যাদি বাজার থেকে কুটে আনবেন। আপনার কষ্ট যেমন কমবে, তেমনই কমবে রান্নাঘর ময়লা হবার যন্ত্রণা।
৮) রান্নাঘরে কখনোই বেশী জিনিস রাখবেন না। কিংবা যা হাতের কাছে পাবেন নিয়ে রান্নাঘরে গুঁজে দেবেন না। রান্নাঘরে যতটা সম্ভব কম জিনিস রাখুন। এতে কাজে যেমন সুবিধা হবে, তেমনই নোংরাও হবে কম।
৯) পেঁয়াজ বা রসুন ইত্যাদি যেসব খাবারের খোসা বাতাসে ওড়ে, সেগুলো কাটার আগে পানিয়ে ভিজিয়ে রাখুন। খোসা উড়ে ঘর নোংরা হবে না।
১০) কখনো প্লাস্টিক বা কাপড়ের ব্যাগ রান্নাঘরে জমাবেন না। ব্যবহার শেষ হলে ফেলে দিন। একান্তই জমাতে হলে একটি ঢাকনা দেয়া পাত্রে বা মুখ আটকানো ব্যাগে জমিয়ে রাখুন।
-প্রিয়.কম অবলম্বনে