উত্তর কোরিয়ার প্রতি গোটা পৃথিবীর একটা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। কন্ডোলিৎসা রাইস দেশটিকে ‘স্বৈরতন্ত্রের আবাসভূমি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। জর্জ ডব্লিউ বুশ একে এক-তৃতীয়াংশ ‘এক্সিস অব ইভিল’ বলেছিলেন। আর ফ্রাঙ্কো ও সিথ রোজেন কিছুটা কৌতুক করে বলেছিলেন, দেশটি পিয়ংইয়ং এর অসমর্থনের ফল। এসব ছাড়াও উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে ১৭টি দারুণ তথ্য জানানো হলো। এর বেশিরভাগই সিআইএ এর তথ্য ভান্ডারে সংরক্ষিত রয়েছে।
১. উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পৃথিবীর ৪র্থ ঘনবসতিপূর্ণ শহর। এর জনসংখ্যা ২.৮৪৩ মিলিয়ন।
২. সিআইএ এর সংজ্ঞা অনুযায়ী অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন বলতে ১৫ বছর এবং তার উর্ধ্বে যাদের বয়স তারা লিখতে ও পড়তে পারেন। এ হিসাবে উত্তর কোরিয়ার শিক্ষার হার শতভাগ।
৩. টাইমস জানায়, সেখানকার নারীদের জন্য রাষ্ট্রের নির্ধারিত ১৪টি চুলের স্টাইল রয়েছে। পুরুষরা ৫ সেন্টিমিটারের বেশি ও ২ সেন্টিমিটারের কম চুল রাখতে পারে না। দেশে মোট ২৮ ধরনের চুলের স্টাইল নির্ধারণ করে দেওয়া রয়েছে।
৪. উত্তর কোরিয়ার মাথাপিছু বাৎসরিক আয়ের চেয়ে কিম জং ইল এর কনিয়াক মদের পেছনে বাজেট ৮০০ গুণ বেশি। তার এ খরচ ৭ লাখ পাউন্ডের সমান।
৫. ইলের ব্যক্তিগত সংগ্রহে ২০ হাজার ভিডিও টেপ সংরক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে র্যাম্বো, গডজিলা ইত্যাদি।
৬. ২০১০ এর বিশ্বকাপে উত্তর কোরিয়া ব্রাজিলের বিরুদ্ধে একটি গোল করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তারা ২-১ গোলে পরাজিত হয়।
৭. উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রফল ১ লাখ ২০ হাজার ৫৩৮ বর্গ কিলোমিটার। দেশটি পেলসিলভেনিয়ার চেয়ে কিছুটা বড়।
৮. দেশটির ২০ শতাংশ ভূমি আবাদী যা প্রায় ৮ হাজার ৮৮০ বর্গ মাইলের সমান। এর পরিমাণ জমি প্রায় নিউ জার্সির সমান।
৯. কোরিয়ান যুদ্ধের পর উত্তর কোরিয়ায় যারা জন্ম নিয়েছেন তারা সবাই গড়ে দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়ে ২ ইঞ্চি খাটো।
১০. উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম। দেশটির ১.১৯০ মিলিয়ন মানুষ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত।
১১. সেনাবাহিনীতে কর্মরত মানুষের সংখ্যা সেনেগালের জনসংখ্যার সমান। এখানে ৬.৫১৫ মিলিয়ন পুরুষ এবং ৬.৪১৮ মিলিয়ন নারী সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
১২. দেশটিতে ২৫ হাজার ৫৫৪ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে যার মাত্র ৭২৪ কিলোমিটার পাকা করা হয়েছে।
১৩. উত্তর কোরিয়ার পাকা রাস্তা যোগ করলে নিউ ইয়র্ক থেকে ক্লিভল্যান্ড পর্যন্ত যাবে। গোটা রাস্তাকে এক করলে তা মারকারিকে দেড় বার ঘুরে আসতে পারবে।
১৪. উত্তর কোরিয়ার ৬ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যের অভাবে রয়েছে এবং ৩৩ শতাংশ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। দেশটির ২৩.৪ শতাংশ জিডিপি আসে কৃষিখাত থেকে। এ দেশে চাল, শস্য, আলু, সয়াবিন, ডাল চাষ হয়। এ ছাড়া ছাগল, শুকর এবং ডিম উৎপাদন হয়।
১৫. বিশ্বের তালিকাভুক্ত ধনী ব্যক্তিদের অর্ধেকের মোট সম্পদের সমান উত্তর কোরিয়ার জিডিপি। শীর্ষস্থানীয় ধনী ম্যাক্সিকোর কার্লোস স্লিমের মোট সম্পদ ৭৯.৯ বিলিয়ন ডলার। উত্তর কোরিয়ার জিডিপি ৪০ বিলিয়ন ডলারের আশপাশে।
১৬. কাতারের মাথাপিছু জিডিপি উত্তর কোরিয়ার চেয়ে ৫৭ গুন বেশি। মাথাপিছু ১ লাখ ২ হাজার ১০০ ডলার জিডিপি নিয়ে কাতার শীর্ষে রয়েছে। উত্তর কোরিয়ায় এর পরিমাণ মাত্র ১ হাজার ৮০০ ডলার।
১৭. বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় সোমালিয়া এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে রয়েছে উত্তর কোরিয়া। এটি ২০১৩ সালের তথ্য।