শখের তোলা নাকি ৮০ টাকা! এটা তো কথার কথা, শখের জন্য মানুষ যে কী করতে পারে, তার ভুরি ভুরি উদাহরণ আমাদের আশপাশেই রয়েছে। নিজেদের কথা ভাবলেও বোঝা যায় শখের কিছু পেতে কী প্রচেষ্টা থাকে আমাদের! আর যাদের টাকা-পয়সার চিন্তা নেই, চাইলেই যে কোনো কিছু কিনে ফেলতে পারেন, তাদের শখের নমুনাটাও আর সবার থেকে আলাদা এবং মুখ হা করে দেওয়ার মতোই। বিশ্বের সর্বোচ্চ ধনীরা তাঁদের শখ কীভাবে পূরণ করেছেন তার কিছু নমুনা দেখে নেওয়া যাক। বিভিন্ন সূত্র থেকে খবরগুলো সাজিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার।
১. গুগলের চেয়ারম্যান এরিক স্মিড সাত কোটি ২০ লাখ ডলার দিয়ে ওয়েসিস নামের একটি ইয়ট কিনেছেন। এই ইয়টের রক্ষণাবেক্ষণে তাঁর প্রতি সপ্তাহে খরচ হয় চার লাখ ডলার। ইয়টের ভেতরে রয়েছে সুইমিং পুল, জেট স্কি এবং একটি জিম, যেটা কিনা আবার ডিস্কো বারে পাল্টে ফেলা যায়।
২. ইয়াহুর প্রধান নির্বাহী মারিসা মেয়ারের ঝোঁকটা আবার ইন্টেরিয়রের দিকে। ২০০৬ সালে ৪০০ পিস গ্লাস আর্ট কিনেছিলেন তিনি। এগুলো ডিজাইন করেছিলেন ডেল চিউলি। সান ফ্র্যান্সিসকোতে ফোর সিজন্স হোটেলে নিজের পেন্টহাউস অ্যাপার্টমেন্ট সাজাতে এসব গ্লাস আর্ট কিনেছিলেন মেয়ার। চিউলির এক একটা গ্লাস আর্টের দাম শুরু হয় ১৫ হাজার ডলার থেকে।
৩. গুগলের দুই সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ এবং সার্গেই ব্রিনের শখ বিমান নিয়ে। সিলিকন ভ্যালির মোফেট ফেডারেল এয়ারফিল্ডে তাদের সংগ্রহে রয়েছে বোয়িং ৭৫৭, বোয়িং ৭৬৭ এবং দুটি গালফস্ট্রিম ভি। ২০০৮ সালে ১৯৮২ সালের ডর্নিয়ার আলফা জেট সংগ্রহ করেন পেজ এবং ব্রিন।
৪. বিমানের বাইরেও ল্যারি পেজের নিজের ইয়ট রয়েছে। ২০১১ সালে ‘সেন্সেস’ নামের এই ইয়টটি ল্যারি কিনেছিলেন নিউজিল্যান্ডের ব্যবসায়ী স্যার ডগলাস মেয়ার্সের কাছ থেকে। বিনিময় মূল্য ছিল মাত্র সাড়ে চার কোটি ডলার।
৫. ওরাকলের প্রধান নির্বাহী ল্যারি এলিসন ২০১২ সালে ৫০ কোটি ডলার দিয়ে লানাই নামের একটি দ্বীপ কেনেন। এই দ্বীপটিকে তিনি টেকসই বাসস্থানের উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলছেন। দ্বীপটিতে আসা-যাওয়ার জন্য একটি বিমানও কিনেছেন তিনি। এর বাইরে দ্রুততম গাড়ি এবং সামরিক বিমান কেনার শখ রয়েছে তাঁর।
৬. ভার্জিন গ্রুপের মালিক রিচার্ড ব্র্যানসন। ক্যারিবিয়ানে ‘নেকের’ নামে একটি দ্বীপ কিনেছেন তিনি। সেখানে ৭৪ একর জায়গা নিয়ে তৈরি করেছেন নিজের বিলাসবহুল রিসোর্ট। ৩০ জন মানুষ আরামসে রিসোর্টটিতে থাকতে পারবেন। দ্বীপ থেকে বেরিয়ে ঘুরে আসতে চাইলে রয়েছে ব্র্যানসনের ইয়ট ‘নেকের বেল্লে’ আর সাবমেরিন ‘নেকের নিম্ফ’।
৭. সমুদ্রের প্রতি ব্র্যানসনের দুর্বলতাটা একটু বেশি। তাই ২০০৪ সালে দুনিয়ার প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ‘অ্যাকুয়াডা’ কিনেছিলেন তিনি। ‘অ্যাকুয়াডা’ হচ্ছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ গতির উভচর যান। ওই যান নিয়েই একটি রেকর্ড গড়েছেন ব্র্যানসন। উভচর যান নিয়ে তিনিই প্রথম ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। আর এতে সময় লেগেছে এক ঘণ্টার ৪০ মিনিট।
৮. মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস পরিচিত বিশ্বের শীর্ষ ধনী হিসেবে। কিন্তু তিনি একজন নিবিষ্ট পাঠকও বটে। তার শখ দুর্লভ বই সংগ্রহ। বিল গেটসের ঘরে যে ব্যক্তিগত লাইব্রেরিটি রয়েছে, সেখানে দুর্লভ বইয়ের এক বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। আর বিল গেটসের জন্য এসব দুর্লভ বই সংগ্রহ করেন বইয়ের একজন পেশাদার ডিলার। ১৯৯৪ সালে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির ‘কোডেক্স লিসেস্টার’ ম্যানুস্ক্রিপ্টটি নিলামে কিনেছিলেন গেটস। পঞ্চদশ শতকের ওই জার্নালে নিজের হাতে বেশ কিছু যন্ত্রের পরিকল্পনা লিখে রেখেছিলেন ভিঞ্চি। জার্নালটি কিনতে গেটস খরচ করেছিলেন তিন কোটি ৮০ লাখ ডলার। এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রীত বই!
৯. বই বাদে গেটসের দুর্বলতা রয়েছে দ্রুতগামী গাড়ির প্রতি। তাঁর গ্যারেজে রয়েছে পোরশে ৯৩০ টারবো, পোরশে ৯৫৯, মার্সিডিজ, জাগুয়ার এক্স জে সিক্স, কারেরা ক্যাবরিয়োলেট ৯৬৪ এবং ফেরারি ৩৪৮। মাইক্রোসফটের শুরুর দিকে ১৯৭৯ সালে পোরশো ৯১১ গাড়িটি কিনেছিলেন গেটস। সেটা দিয়ে মরুভূমিতে রেসে অংশ নিতেন তিনি।
-ntvbd.com অবলম্বনে