কেজরিওয়াল তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আমি জানতাম, দিল্লির মানুষ আমাকে ভালোবাসে, কিন্তু এত ভালোবাসে তা জানতাম না।’
আগামী পাঁচ বছর দিল্লির জনগণের সেবায় নিজেকে পরিপূর্ণভাবে আত্মনিয়োগ করার ঘোষণা দেন এএপিপ্রধান। তিনি বলেন, ‘দিল্লি হবে ভারতের প্রথম দুর্নীতিমুক্ত রাজ্য।’
দুর্নীতিবিরোধী লোকপাল বিলকে গুরুত্বপূর্ণ অভিহিত করে তা যথা সম্ভব দ্রুত পাস করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন কেজরিওয়াল। একই সঙ্গে দিল্লিতে ভিআইপি সংস্কৃতির অবসান ঘটানোর ঘোষণা দেন তিনি।
কেজরিওয়াল তাঁর ভাষণে জানান, কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা ও সুসম্পর্ক গড়তে চান তিনি।
এএপিপ্রধান বলেন, ‘সব ধর্ম-বর্ণ ও শ্রেণির মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন।’
কেজরিওয়াল বলেন, ‘আমি কিরণ বেদীকে শ্রদ্ধা করি। তিনি আমার বড় বোনের মতো। প্রশাসনে তাঁর ভালো অভিজ্ঞতা আছে। তাঁর পরামর্শ দরকার। আমি অজয় মাকেনের সঙ্গেও যোগাযোগ করব। দিল্লিকে আদর্শ রাজ্য গড়তে সবাইকে যুক্ত করব।’
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য রামলীলা ময়দান প্রস্তুত করতে গতকাল শুক্রবার এএপির কর্মীরা ব্যস্ত সময় কাটান। ময়দানে প্রায় ৩৫ হাজার দর্শকের জন্য বসার ব্যবস্থা করা হয়। বাকিরা দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান দেখেন। দর্শকদের সুবিধার জন্য ময়দানের ভেতরে ও বাইরে বেশ কয়েকটি এলইডি পর্দা লাগানো হয়।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ময়দান ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় তিন হাজার সদস্য নিরাপত্তা দেন। তাঁদের সহায়তা করেন এএপির প্রায় দুই হাজার সদস্য।
রামলীলা ময়দানে যাওয়ার উদ্দেশে স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাজিয়াবাদের বাসভবন থেকে গাড়িতে করে রওনা দেন কেজরিওয়াল। মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে দুপুর ১২টার আগেই রামলীলা ময়দানে উপস্থিত হন এএপিপ্রধান। এ সময় বিপুল হর্ষধ্বনি ও উল্লাস প্রকাশ করে তাঁদের অভিবাদন জানায় জনসমুদ্র।
স্থানীয় সময় দুপুর সোয়া ১২টায় শপথ নেন কেজরিওয়াল। তাঁকে শপথ গ্রহণ করান দিল্লির উপরাজ্যপাল নাজিব জং। এরপর কেজরিওয়ালের মন্ত্রিসভার ছয়জন সদস্যও শপথ নেন। তাঁরা হলেন মনীশ সিসোদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈন, গোপাল রাই, জিতেন্দ্র টোমার, সন্দীপ কুমার ও আসিম আহমেদ খান।
কেজরিওয়ালসহ এএপির জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় নগর উন্নয়নমন্ত্রী ভেঙ্কাইয়া নাইডুকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাঁরা কেউই ‘অন্য কাজ থাকায়’ হাজির হননি।
এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত চার দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন কেজরিওয়াল। তিনি বেশ অসুস্থ। শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা শেষে দায়িত্ব গ্রহণ করতে দিল্লির সচিবালয়ে যান কেজরিওয়াল।