রমজানে রোজা রাখা ফরজ। সেজন্য রমজানের প্রধান আমল- সুন্নাহ মোতাবেক রোজা পালন করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে রোজা রাখে।
১. রোজা রাখা : রমজানে রোজা রাখা ফরজ। সেজন্য রমজানের প্রধান আমল- সুন্নাহ মোতাবেক রোজা পালন করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে রোজা রাখে।’ (সূরা বাকারা : ১৮৫)।
২. সাহরি খাওয়া : রোজা পালনে সাহরি খাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে। অনেকে সাহরি খান না, অনেকে আগ রাতে খেয়েই শুয়ে পড়েন। এটি সুন্নাহ পরিপন্থী। কারণ ইহুদি ও খ্রিস্টানরা সাহরি খায় না। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমাদের ও আহলে কিতাবদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি গ্রহণ।’ (মুসলিম : ২৬০৪)।
৩. ইফতার করা এবং অন্যকে করানো : সিয়ামের পূর্ণ সওয়াব পাওয়ার জন্য দ্রুত ইফতার করতে হবে। সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা বিরাট ফজিলত। অন্যদিকে হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে তার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে, তাদের উভয়ের সওয়াব থেকে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না।’ (ইবনে মাজাহ : ১৭৪৬)।
৪. জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় : রমজানে ফরজ নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল। অনেকে ফরজ নামাজ আদায়ে উদাসীন থাকেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘অতএব সেই নামাজ আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ, যারা নিজদের নামাজে অমনোযোগী।’ (সূরা আল মাউন : ৪-৫)।
৫. তারাবির নামাজ পড়া : তারাবির নামাজ আদায় রমজানের অন্যতম আমল। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াব হাসিলের আশায় রমজানে কিয়ামু রমজান (সালাতুত তারাবি) আদায় করবে, তার অতীতের সব গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে।’ (বোখারি : ২০০৯)।
৬. বেশি বেশি দান-সদকাহ করা : রোজা-নামাজ ইত্যাদির পাশাপাশি দান-সদকার মাধ্যমেও ফজিলত অর্জন করতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল আর রমজানে তাঁর এ দানশীলতা আরও বেড়ে যেত।’ (বোখারি : ১৯০২)
৭. বেশি বেশি দোয়া-এস্তেগফার করা : এ মাসে বেশি বেশি দোয়া-এস্তেগফার করা উচিত। হাদিসে এসেছে, ‘ইফতারের মুহূর্তে আল্লাহ তায়ালা বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়াটি রমজানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে।’ (আল জামিউস সাগির : ৩৯৩৩)।
৮. ইতিকাফ করা : ইতিকাফ অর্থ অবস্থান করা। অর্থাৎ মানুষ থেকে পৃথক হয়ে সালাত, সিয়াম, কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া, ইসতিগফার ও অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্যে একাকী কিছু সময় যাপন করা। এ ইবাদতের এত মর্যাদা যে, প্রত্যেক রমজানে রাসুল (সা.) শেষ ১০ দিন নিজে এবং তাঁর সাহাবিরা ইতিকাফ করতেন।
৯. লাইলাতুল কদর তালাশ করা : পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ (সূরা কদর : ৪)। রাসুল (সা.) আমাদের শেষ ১০ দিন লাইলাতুল কদর তালাশ করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে কদরের রাত খোঁজ।’ (বোখারি : ২০২০)।
১০. তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া : রমজানে নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়া অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। রমজানের কারণে এ ফজিলত বহুগুণে বেড়ে যায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘ফরজ নামাজের পর সর্বোত্তম নামাজ হলো রাতের নামাজ অর্থাৎ তাহাজ্জুদের নামাজ।’ (মুসলিম : ২৮১২)।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মিরাজ রহমান
-প্রিয়.কম অবলম্বনে