উচ্চ রক্তচাপের কথা প্রায়ই বলা হয়। নানা চিকিৎসাও নেন অনেকে। কিন্তু নিম্ন রক্তচাপ? অনেকে বলে থাকেন, আমার লো প্রেশার। কিন্তু রক্তচাপ কমে যাওয়া কি কোনো সমস্যা? বা এর কোনো চিকিৎসার দরকার আছে কি?
রক্তচাপ কেন কম?
আমরা রক্তচাপ মাপার সময় দুটি চাপ মাপি—একটা হলো সিস্টোলিক, আরেকটা ডায়াস্টোলিক। সিস্টোলিক চাপ ৯০ মিমি পারদ এবং ডায়াস্টোলিক চাপ ৬০ মিমি পারদের কম হয়ে গেলে রক্তচাপ কমে গেছে বলা যাবে। এর আগে নয়। দিনের বিভিন্ন সময় রক্তচাপের তারতম্য হতে পারে। হাঁটা-চলা, ব্যায়াম, পরিশ্রম, পানিশূন্যতা, বিশ্রাম বা ঘুম—অনেক কিছুর সঙ্গে রক্তচাপের সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি দীর্ঘ সময় দাঁড়ানো বা শোয়া, বসা বা ভঙ্গি পরিবর্তনও রক্তচাপের ওপর প্রভাব ফেলে। সঠিকভাবে সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে রক্তচাপ মাপা না হলে অনেক সময়ই উল্টাপাল্টা হতে পারে। এখন আসুন জেনে নিই কী কী কারণে রক্তচাপ কমে যেতে পারে?
—অ্যাথলেট, দৌড়বিদ বা নিয়মিত ভারী পরিশ্রম করেন এমন ব্যক্তিদের রক্তচাপ স্বাভাবিকভাবেই কমের দিকে থাকে।
—বয়স্ক ব্যক্তিদের নানা কারণে রক্তচাপ কমে যেতে পারে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো নানাবিধ ওষুধের ব্যবহার।
—শোয়া বা বসা থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে রক্তচাপ একটু কমে যায়। ১০ থেকে ২০ শতাংশ ৬৫-ঊর্ধ্ব ব্যক্তির এই সমস্যা থাকে।
—রাতে, ঘুমের মধ্যে বা পরে এবং খাবার পর রক্তচাপ খানিকটা কম থাকে, আবার হাঁটা-চলা, ব্যায়ামের পর একটু বেড়ে যায়। এই তারতম্য সিস্টোলিক ২০ মিমি এবং ডায়াস্টোলিক ১০ মিমি পারদের বেশি হলে তা গুরুত্বপূর্ণ।
—গর্ভাবস্থায় প্রথম দিকে রক্তচাপ কমতে পারে। ডায়রিয়া, বমি, রক্তক্ষরণ, রক্তশূন্যতা বা পানিশূন্যতায় রক্তচাপ কমার কথা। থাইরয়েড ও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির সমস্যায়ও রক্তচাপ কমে।
—হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিউর এবং হার্টের ভালভের সমস্যায় রক্তচাপ হঠাৎ কমে যেতে পারে। হঠাৎ জরুরি অবস্থায় রক্তচাপ বেশি কমে যাওয়া শক-এর লক্ষণ। নানা কারণেই রোগী শক-এ যেতে পারে।
রক্তচাপ কমলে কী করণীয়
রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে মাথা ঝিমঝিম, মাথা ঘোরা, মাথা হালকা বোধ করা, হঠাৎ পড়ে যাওয়া, অজ্ঞান হওয়া বা চোখে অন্ধকার দেখা, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসা, দুর্বল বোধ করা ইত্যাদি হতে পারে। হঠাৎ করে এমন হলে এর পেছনের কারণ খতিয়ে দেখাই উচিত। তবে অনেকেরই রক্তচাপ একটু কমের দিকে থাকে এবং এতে তাদের কোনো সমস্যা হয় না। এ নিয়ে উদ্বেগেরও কোনো কারণ নেই।
– প্রথম আলো