খাবার নিয়ে বেশ কিছু বিষয় প্রচলিত আছে, যা কম বেশি আমরা সবাই মেনে চলি বা চলার চেষ্টা করি। যেমন দিনে আট গ্লাস পানি থেতে হবে বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিছু খাওয়া উচিত নয়।
এ ধরনের নিয়মগুলো আমাদের সকলেরই জানা। তবে কিছু কিছু জায়গায় ভুল রয়ে গেছে। ফিমেলফার্স্ট ডটকমের এক প্রতিবেদনে অনলাইনভিত্তিক বডিবিল্ডিং সাপ্লিমেন্ট প্রোভাইডার ‘নেচারস বেস্ট নিউট্রিশন’-এর বিশেষজ্ঞরা প্রচলিত ধারণাগুলোর আসল তথ্য তুলে ধরেছেন।
ধারণা
দিনে আট গ্লাস পানি পান করতে হবে, এমন পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। আর ৫১ শতাংশ মানুষ এটিকে সত্য মনে করে পালন করে থাকেন।
বাস্তবতা
মানুষের শরীর এবং কাজ ভেদে তার শরীরে পানির চাহিদা নির্ভর করে। তাই আট গ্লাস পানি পানের বিষয়টি সকলের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ যারা খেলাধুলা করেন বা শারীরিক পরিশ্রম বেশি করেন তাদের শরীরে পানির চাহিদা বেশি থাকে। তাই তাদের বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হয়। আবার যারা অনেক ফলমুল খেয়ে থাকেন বা যেদিন পানি-জাতীয় খাবার বেশি খাওয়া হয় সেদিন কম পানি খেলেও কোনো সমস্যা হয় না।
ধারণা
রোদ বা ‘ট্যান’ হওয়া ত্বকের জন্য উপকারী, এ বিষয়টিকে সত্য মনে করেন প্রায় ৬৮ শতাংশ মানুষ।
বাস্তবতা
রোদা পুড়ার প্রত্যক্ষ প্রমাণ হল ‘ট্যান’। তাই এখানে স্বাস্থ্যকর অথবা ত্বকের কোনো উপকারীতা নেই। সূর্যের আলো ত্বকের জন্য খুব অল্প সময়ের জন্য উপকারী। যখন ত্বক ট্যান হবে তখনই বুঝতে হবে ত্বক সূর্যের আলো আর সহ্য করতে পারছে না তাই পুড়ে গেছে। অতিরিক্ত ট্যান ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া বেশি সময় সূর্যের আলোতে থাকার ফলে ত্বকে বয়সের ছাপও ফেলে তাড়াতাড়ি।
ধারণা
ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এ ধারণা সমর্থন করে থাকেন ৪৫ শতাংশ মানুষ।
বাস্তবতা
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তাদের প্রায়ই আঁশযুক্ত খাবার খেতে বলা হয়। তাছাড়া খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার থাকলে তা হজমে সহায়তা করে। তাই অনেকেই ভুষি বা ভুষিজাতীয় সিরিয়াল বেশি খাওয়ার চেষ্টা করেন, যা কোষ্ঠকাঠিন্য আরও বাড়িতে দিতে পারে। তাছাড়া অদ্রবণীয় আঁশযুক্ত খাবার কিছু মিনারেল শোষণেও শরীরেকে বাঁধা দেয়, যেমন: একই সময়ে আঁশযুক্ত আর আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেলে আয়রন শরীরে ঢুকতে পারে না। তাই আঁশযুক্ত খাবার হিসেবে সবচেয়ে ভালো হল সবজি ও ফল। বিশেষ করে শুকনা ফল। এর থেকে শরীরে যে জেল তৈরি হয় তা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
ধারণা
রাতে বা ঘুমাতে যাওয়ার আগে খাবার গেলে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ৬৬ শতাংশ মানুষ এটি বিশ্বাস করেন।
বাস্তবতা
রাতের খাবারে যদি বেশি কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ধরনের খাবার খাওয়া হয় তাহলে শরীরে চর্বি জমে। সেই সঙ্গে রক্তে ইন্সুলিনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে এসব কিছুই নির্ভর করে সারাদিনে কি পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটজাতীয় খাবার গ্রহণ করা হয়েছে এবং সে তুলনায় কতটুকু পরিশ্রম করা হয়েছে। তাই মুটিয়ে যাওয়া থেকে বাঁচতে প্রোটিন, ফাইবার এবং অল্প ফ্যাটের সমন্বয়ে একটি আদর্শ খাদ্যাভ্যাস তৈরির চেষ্টা করুন।
-বিডি নিউজ অবলম্বনে